ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় মৎস্যজীবীদের চিংড়ি জমি বিএনপি নেতার দখলে

dokholজহিরুল ইসলাম,চকরিয়া ::::
চকরিয়ায় সংখ্যালঘু ৪২ মৎস্যজীবী পরিবারের ৪২০ একর চিংড়ি জমি এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতা জবর দখল বছরের পর বছর ভোগদখল করে যাচ্ছে। সংখ্যালঘু পরিবার গুলোর নামে জেলা চিংড়ি মহাল কমিটি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তার পাঠানোর পরও জমিতে দখলে যেতে পারছেন না। ওই সময় এ কমিটির সভায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। এতে চকরিয়া উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের রামপুরের ৪২ মৎস্যজীবী পরিবারের ১১শ’ সদস্যের মাঝে চরম হতশা নেমে এসেছে। গতকাল ৩০ এপ্রিল চকরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু মৎস্যজীবীরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
উপজেলার শাহারবিল রামপুরের রবি জলদাস জানান, তাদের ৪২টি মৎস্যজীবী পরিবারে প্রায় ১২শত জন সদস্য রয়েছে। ওই মৎস্যজীবীরা খালে বিলে মৎস্য আহরণ করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বিগত ১৯৮৫-৮৬ সালে সরকার ওই ৪২টি পরিবারের জন্য চিংড়ি চাষের নীতিমালানুযায়ী রামপুর মৌজায় ৪২০ একর চিংড়ি জমি ১০ বছরের জন্য লীজ দেয়। কিন্তু লীজ দেয়ার কয়েক বছরের মধ্যে শাহারবিল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আবদুল হাকিম কৌশলে ওই চিংড়ি জমিগুলো নিজের দখলে নিয়ে নেয়। পরে খাজনা পরিশোধ করার কথা বলেও খাজনা পরিশোধ না করে জলদাস পরিবার গুলোর বিরুদ্ধে খাজনা অনাদায়ের মামলা করিয়ে দেয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত মৎস্যজীবী পরিবার গুলো জমিগুলো উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়ে আসছেন। গত জুন মাসে জেলা চিংড়ি মহাল কমিটির সভায় অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অদ্যবদি কোন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। এতে বরাবরের মতো নানা কৌশলে প্রভাবশালী ব্যক্তি আবদুল হাকিম ও তার আত্মীয়স্বজন চিংড়ি জমিগুলো দখলে থেকে যাচ্ছে। বিরট জলদাস জানান, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম ৪২০ একর চিংড়ি জমি নিজের ভাই, স্ত্রী, ছেলে মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনের নামে লীজ নিয়ে নেয়। ওই লীজের মেয়াদ ২০১০ সালে শেষ হয়ে গেছে। গত বছরের জুলাই মাসে জেলা চিংড়ি মহাল কমিটির সভায় ওই চিংড়ি জমিগুলো সংখ্যালঘুদের নামে বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের নামে লীজ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আবদুল হাকিম নিজের লোক দিয়ে অবৈধভাবে চিংড়ি জমি গুলো এখনও নিজের দখলে রেখে দেন। পুরণ জলদাস জানান; আবদুল হাকিম প্রভাবশালী ও খুবই চতুর লোক। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মামলার পর মামলা করে যাচ্ছে। এক আদালতে মামলা শেষ হলে আবার অন্য আদালতে গিয়ে মামলা করেন। চিংড়ি জমিগুলো নিজের দখলে রেখে সেখান থেকেই মামলার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ আমরা গরীব মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছি। এ ব্যাপারে শাহারবিল ইউনিয়নের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবদুল হাকিম জমিগুলো তার দখলে থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, চিংড়ি জমিগুলো আমি বৈধভাবে দখলে আছি, সামনেও দখলে থাকবো। জলদাসেরা কোন দিন এ জমি পাবেন না।

পাঠকের মতামত: